আমরা যারা কম্পিউটার ব্যবহার করি তারা নিশ্চয় জেনে থাকবো যে কম্পিউটার এর নিজস্ব একটি ভাষা রয়েছে। যেখানে এই কোড ব্যবহৃত হয়।
আমরা আমাদের আজকের আর্টিকেল টিতে চেষ্টা করবো কোড কি? এবং বহুল ব্যবহৃত কোড কোনগুলো সেই সম্পর্কে বিস্তারিত ধারনা দিতে। তো চলুন শুরু করা যাক।
কোড(Code) কাকে বলে?
কম্পিউটার সিস্টেমে ব্যবহৃত প্রতিটি বর্ণ,অংক, সংখ্যা বা বিশেষ চিহ্নকে আলাদা আলাদা উপায়ে CPU কে বুঝানোর জন্য বাইনারি বিট অর্থাৎ, ০ এবং ১ এ রূপান্তর করে বিভিন্নভাবে সাজিয়ে অদ্বিতীয় একটি সংকেত তৈরি করা হয়। এই অদ্বিতীয় সংকেতকেই বলা হয় কোড।
ইউনিকোড কি? এর বৈশিস্ট্য কি কি? আসকি (ASCII) এবং ইউনিকোড এর পার্থক্য কি?
ডাটা ইনপুট করার জন্য কোডিং এর দরকার পরে। প্রসেসিং শেষ হওয়ার পর আবার আউটপুটকে ডিকোডিং করা হয়।
এই উপায়ের মাধ্যমে কোডকে আবার বর্ণ, সংখ্যা বা চিহ্ন দিয়ে রূপান্তর করা হয়।
বহুল ব্যবহৃত কোড কোনগুলো ?
কম্পিউটার সিস্টেমে যে অদ্বিতীয় সংকেত বা কোড ব্যবহার করা হয় তা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। একেক সময় একেকজন তার নিজস্ব সুবিধার জন্য ভিন্ন ভিন্ন কোড ব্যবহার করে থাকে।
বহুল ব্যবহৃত কয়েকটি কোডের নাম নিম্নরূপ–
১। অক্টাল কোড (Octal Code)
২। হেক্সাডেসিমাল কোড (Hexadecimal Code)
৩। বিসিডি কোড (BCD Code)
৪। আলফানিউমেরিক কোড (Alphanumeric Code)
৫। অ্যাসকি কোড ( ASCII Code)
৬। ইবিসিডিআইসি কোড ( EBCDIC Code)
৭। ইউনিকোড (Uni Code)
৮। মোর্স কোড ( Morse Code)
৯। গ্রে কোড (Gray Code) ইত্যাদি ।
১। অক্টাল কোড কি?
অক্টাল সংখ্যার প্রতিটি অংককে বাইনারি সংখ্যার তিন বিটের গ্রুপ দ্বারা সমতুল্য বাইনারি সংখ্যায় প্রকাশ করাকেই অক্টাল কোড বলে।
যেহেতু অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতিতে ০ থেকে ৭ মোট ৮ টি অংকের প্রতিটিকে নির্দেশের জন্য ৩ টি বাইনারি অংক প্রয়োজন হয়। সুতরাং ৩ টি বিট দ্বারা ২^৩ অর্থাৎ মোট ৮ টি ভিন্ন অবস্থা নির্দেশ করবে।
২। হেক্সাডেসিমাল কোড কি?
হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতিতে (0 – F) পর্যন্ত মােট ১৬টি সংখ্যা ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ এই সংখ্যা পদ্ধতির সবচেয়ে বড় সংখ্যাটি হচ্ছে F, এর বাইনারী (F)2 = (1111)2। যেহেতু হেক্সাডেসিমালের সর্বোচ্চ সংখ্যাটি প্রকাশ করতে 4টি বিটের প্রয়ােজন পড়ে। সেহেতু বলা যায় যে, হেক্সাডেসিমাল 4 বিটের একটি কোড।
৩। বিসিডি কোড কি?
দশমিক সংখ্যাকে বাইনারি সংখ্যায় প্রকাশ করার জন্য যে কোড ব্যবহার করা হয় তাই BCD (binary coded decimal) কোড ।
৪। আলফানিউমেরিক কোড কি?
কম্পিউটারের জন্য তথ্য বা নির্দেশক কে কয়েক ধরনের চিহ্ন দিয়ে প্রকাশ করা হয়। যার মধ্যে একটি হলো বর্ণমালার অক্ষর, যেমন- A-Z এবং অন্যটি সংখ্যা যেমন, 0-9, এবং আর একটি হলো বিশেষ চিহ্ন (যেমন- !, @, $, #,£ ) ইত্যাদি। এ বিভিন্ন ধরনের চিহ্নিত কোড কে আলফানিউমেরিক কোড বলে।
৫। আসকি কোড কি?
ASCII এর পূর্ণরূপ হলো American Standard Code for Information Interchange. এটি একটি বিশেষ ধরণের কোড পদ্ধতি যা অধিকাংশ মাইক্রো কম্পিউটারে বর্ণমালা, সংখ্যা ও বিশেষ চিহ্ন প্রকাশের জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
১৯৬৫ সালে Robert William Bemer সাত বিটের ASCII কোড উদ্ভাবন করেন। এটি একটি বহুল প্রচলিত 7 বিট কোড, যার বাম দিকের তিনটি বিটকে জোন এবং ডান দিকের চারটি বিটকে সংখ্যাসূচক বিট ধরা হয়। সর্ব বামে একটি প্যারিটি বিট যোগ করে একে (ASCII – 8) আট বিট ASCII তে পরিণত করা হয়। এই কোডের 7 টি বিট দ্বারা 27=128 টি ক্যরেক্টার কে প্রকাশ করা যায়।
৬। ইবিসিডিআইসি কোড কি?
ইবিসিডিআইসি এর পূর্ণরূপ হলো- এক্সটেন্ডেড বাইনারি কোডেড ডেসিমাল ইনফরমেশন কোড (Extended Binary Coded Decimal Interchange Code (EBCDIC)). এটি হলো বিসিডি কোডের একটি উন্নত রূপ।
বিসিডি কোডের কিছু সীমাবদ্ধতা কারণে ১৯৬৩-১৯৬৪ সালে IBM ৮ বিটের ইবিসিডিআইসি কোড চালু করে।
আর যেখানে বিসিডি কোডে মাত্র ৬৪টি বর্ণ সমর্থন করত যা অনেক সমস্যা সৃষ্টি করে; এই সমস্যা সমাধানের জন্য বিসিডি কোডের আকার ৪ বিট বৃদ্ধি করে ৮ বিট করা হয়, ফলে এতে ২৫৬টি আলাদা বর্ণকে সমর্থন করে।
তবে বর্তমান সময়ে লক্ষ্য করলে দেখা যায় অ্যাসকি কোড ও ইউনিকোড বেশি ব্যবহৃত হয়।
আশা করছি আজকের আলোচনা থেকে আপনারা উপকৃত হবেন।ধন্যবাদ।